ঢাকা, রোববার   ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ৩০ ১৪৩১

নারী ও প্রকৃতি

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৫৫, ২৯ আগস্ট ২০২৪  

নারী ও প্রকৃতি

নারী ও প্রকৃতি

ফেনীর দুর্গম এলাকা জগতপুর গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি ভালো না। নয়নতারার স্বামী মন্টু মিয়া শহরে গেছে, ঘরে একা আছে সে। সারা বিকাল বৃষ্টি। আদরের বিড়াল মনুরে নিয়ে নয়নতারা কোনরকমে ভাঙ্গাচোরা খাটটার মধ্যে শুয়ে আছে। বিকাল গড়িয়ে রাত হয় কিন্তু তার স্বামী আর ফিরে আসে না। দুশ্চিন্তায় তার কপালে ভাঁজ পড়ে।

সন্ধ্যা হতে না হতেই বাইরে ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। ঘরের কোনায় হারিকেন টা জ্বলছে আর নিভছে। বিড়ালটা বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দে মাঝে মাঝে কেঁপে ওঠছে। কখন যে নয়নতারা ঘুমিয়ে পড়েছিল সে নিজেই জানে না। ঘুম ভেঙে দেখে খাট ছুঁই ছুঁই পানি। হারিকেনের আলোতে দেখে একটা সাপ তার খাটের দিকে ধেয়ে আসছে। বিড়ালকে কোলে নিয়ে নয়নতারা একলাফে ঘরের মাচায় উঠে বসে। 
-  কন্ডায়গো আর সুন্দরী ভা‌বি, ভাইয়া‌তো শ‌হরে বড্ডা জা‌মিলায় হ‌ড়ি গে‌ছে, গা‌ড়ি‌-ঘোড়া সব বন্ধ, আইজ্জা ম‌নে হয় আর বাইত আই‌তো‌নো
পাশের বাড়ির বদমাশ ইলিয়াসের গলা শুনতে পেয়ে নয়নতারার বুক ধড়ফড় করে। 
- কন্ডায়গো ভাবি 
একটা লাথি মেরে সে দরজা খুলে ঘরে ঢুকে পড়ে।
নয়নতারা বোঝে তার বড় বিপদ, নিচে পানি তার মধ্যে বিষধর সাপ। আর এখন আছে সাপের চেয়ে ভয়ংকর ইলিয়াস।
ইলিয়াস বুঝতে পারে নয়নতারা মাচার উপরে। সে লাফ দিয়ে মাচার উপরে ওঠার চেষ্টা করে ।

নয়নতারার মধ্যে যেন একটা শক্ত আত্মা ভর করে! সে হাতে একটা লাঠি নিয়ে আগেই প্রস্তুত ছিলো। ইলিয়াস যেই মাথা উপরে তোলে, সেই সময় সে লাঠি দিয়ে মেরে  ইলিয়াসকে নিচে পানির মধ্যে ফেলে দেয়। নয়নতারা তার বিড়াল মনুকে কোলের মধ্যে নিয়ে গাড়ো অন্ধকারে পালাতে লাগলো। প্রায় কোমর পর্যন্ত পানি নিয়ে প্রচন্ড জোরে দৌড়াতে দৌড়াতে বেড়িবাঁধের উপরে উঠে সে। মনে মনে ভাবে ‘নারীর শরীরে কি এমন আছে, যার জন্য পুরুষ এই ঝরঝঞ্ঝার রাতে, এই বিপদের মধ্যেও এমন ভয়ংকর আচরণ করে।’

সর্বশেষ
জনপ্রিয়