ঢাকা, বুধবার   ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৩ ১৪৩১

ব্যাংক খাতের ৯৫ শতাংশ আমানত হিসাব সুরক্ষিত : গভর্নর

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৫৮, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

ব্যাংক খাতের ৯৫ শতাংশ আমানত হিসাব সুরক্ষিত : গভর্নর

ব্যাংক খাতের ৯৫ শতাংশ আমানত হিসাব সুরক্ষিত : গভর্নর

আমানত বীমা দ্বিগুণ করার কারণে ব্যাংক খাতের মোট আমানতকারীর প্রায় ৯৫ শতাংশ হিসাবই সুরক্ষিত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।গতকাল রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর আরও বলেন, আমানতকারীদের আস্থা ফেরাতে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ লক্ষ্যে ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স দ্বিগুণ করা হয়েছে। এতে ৯৪ দশমিক ৬০ শতাংশ আমানতকারীর হিসাব নিরাপদ হলো। এর ফলে কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হলে বীমার তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ফেরত পাবেন। এতদিন এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার বিধানছিল। কোনো দেশে এর বেশি নিরাপত্তা দেওয়া হয় না। আমরা আশা করি কোনো ব্যাংকই দেউলিয়া হবে না। তবে ভেতরে ভেতরে অনেক ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে আছে। এগুলো যাতে পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে। প্রথমে ১০টি ব্যাংক, এরপর ক্রমান্নয়ে সব ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা পরীক্ষা করা হবে। এরপর প্রয়োজনে মার্জ করা হবে। তবু গ্রাহকের আমানত ঝুঁকিতে ফেলা হবে না।

ব্যাংক খাতের তারল্য সংকটের বিষয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ৭০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক খাতের বাইরে ছিল। তাই সংকট দেখা দিয়েছিল। বর্তমানে ৩০ হাজার কোটি টাকা ফেরত এসেছে। তাই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ফলে টাকা উত্তোলনের যে সীমা ছিল, তা তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে যে ১০টি ব্যাংকের সমস্যা রয়েছে, তাদের গ্রাহকদের আরও কিছুদিন ধৈর্য ধরতে হবে। গভর্নর জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়নি। কেউ অনিয়ম করলেও তার প্রাতিষ্ঠানিক হিসাব চালু রাখা হয়েছে, যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে। এ বিষয়ে সুযোগসন্ধানীরা নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, টাস্কফোর্স গঠনের কাজ অনেকটাই এগিয়ে গেছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যেই কাজ শুরু করতে পারব। ব্যাংকগুলোর ফরেন্সিক প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করবে এডিবি। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর স্বাস্থ্য যাচাই করে সে আলোকে কাজ করবে টাস্কফোর্স। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর লেনদেন দৈনিক ভিত্তিতে যাচাই করা হচ্ছে। নিয়মিত ক্যাশফ্লো মনিটরিং করা হচ্ছে।

ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে জানিয়ে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৫ হাজার কোটি টাকা রয়েছে, কিন্তু বিতরণ হচ্ছে না। তার মানে পদ্ধতিগত ক্রটি আছে। কঠিন শর্ত দিয়ে ঋণ বিতরণ হবে না, নমনীয় নীতি দরকার। আমরা চেষ্টা করব যাতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ঋণ পায়। এ খাতে এডিবি অর্থ সহায়তা করতে আগ্রহী।

এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, প্রভাবশালীদের জন্য যেসব পলিসি করা হয়েছে, তা রিভিউ করা হবে। রিভিউ করার পর যদি দেখা যায় ১০ জন বা ২০ জন লোকের জন্য করা হয়েছে, তাহলে তা বাতিল করা হবে। ব্যাংক খাতের পরিবারতন্ত্র রুখতে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে হবে। তবে তা এখনই করা হচ্ছে না। শেষ দিকে করা হবে। কারণ, আইন বারবার পরিবর্তন করা যায় না।

এক্সিম ব্যাংকে টাকা ছাপিয়ে তারল্য সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে গভর্নর বলেন, এটা আগের প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিল। তাই দেওয়া হয়েছে। এখন আর কাউকে দেওয়া হবে না। তবে ব্যাংকগুলো যাতে তারল্য সহায়তা পায়, সেজন্য আন্তঃব্যাংক থেকে ধার করার সুযোগ করে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে ওই সব ব্যাংকের গ্যারান্টার হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এস আলমের সম্পদ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব সম্পদ কেউ কিনলে নিজ দায়িত্বে কিনতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো দায়-দায়িত্ব নেবে না।

ব্যবসা বাণিজ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়